আলুবোখারার পুষ্টিগুণ

ছোট্ট একটি ফলের নাম আলুবোখারা। টক মিষ্টি স্বাদের মাংসালো এই ফলটি খেতে খুবই সুস্বাদু।
চাষের ভিন্নতায় আলুবোখারার রঙ ভিন্ন হয়ে থাকে, যেমন- লাল, কফি, গাঢ় নীল, ম্যাজেন্টা, হলুদ এবং হালকা সবুজ। ফলটি সাধারণত গোলাকৃতির হয়, মাঝে মাঝে হৃদয়াকৃতিরও পাওয়া যায়। আমরা সাধারণত আলুবোখারা বলতে যেটা পাই সেটা ফলটির শুকনো রূপ। এটা খেতে খুবেই সুস্বাদু। খাবারের স্বাদ বাড়াতেও মসলা হিসেবে এর জুড়ি নেই। শুধু কি তাই, ফলটিতে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান।

প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী আলুবোখারায় আপনি পাবেন খাদ্যশক্তি ৪৬ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেটস ১১.৪২ গ্রাম, প্রোটিন ০.৭০ গ্রাম, ফ্যাট ০.২৮ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ১.৪০ গ্রাম, ফোলেট ৫ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন ০.৪১৭ মিলিগ্রাম, প্যানথোনিক অ্যাসিড ০.১৩৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ৩৪৫ আইইউ, ভিটামিন সি ৯.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন ই ০.২৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ৬.৪ মাইক্রোগ্রাম, সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ১৫৭ মিলিগ্রাম, ক্যাসসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম, কপার ০.০৫৭ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.১৭ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৬ মিলিগ্রাম, জিংক ০.১০ মিলিগ্রাম। উপকারী এসব উপাদান নিঃসন্দেহে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ভূমিকা রাখতে সক্ষম। আজ জেনে নেব দারুণ পুষ্টিগুণে গুণান্বিত আলুবোখারা আপনাকে সুস্থ রাখতে কী কী ভূমিকা রাখতে পারে।



চোখের যত্নঃ

ভিটামিন এ এর জন্য আলুবোখারা খুব ভালো একটি উৎস। চোখের দৃষ্টি ভালো রাখতে ভিটামিন এ সক্রিয় ভূমিকা রাখে। চোখের অন্যান্য রোগ দমনেও কাজ করে।

হজম বৃদ্ধিঃ

আলুবোখারায় উপস্থিত পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যআঁশ আপনার হজম বাড়িয়ে খাবারের রুচি বৃদ্ধি করে। পেটের রোগ দমনেও সাহায্য করে থাকে।

লৌহ কণিকা বৃদ্ধিঃ

এতে উপস্থিত লৌহ শরীরে রক্ত বাড়াতে সক্ষম। নিয়মিত খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয়। যাদের প্রয়োজনের তুলনায় রক্ত উৎপাদন কম হয় বা যেকোনো কারণে রক্তশূন্যতা হয় তবে নিয়মিত কিছুদিন আলুবোখারা খেতে পারেন।

রক্তচাপ রোধঃ

আলুবোখারায় থাকা ভিটামিন কে রক্তের যেকোনো রোগ দমনে সহায়তা করে। উচ্চরক্তচাপ রোধ, স্ট্রোক থামানো এবং রক্তের সরল গতি নিশ্চিত করে।

হৃদযন্ত্রের সুস্থতাঃ

হৃদযন্ত্রের সুস্থতায় আলুবোখারার তুলনা হয় না। এটি অতি উচ্চ গুণ সম্পন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বহন করে। দেহের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল তাড়িয়ে আপনাকে সুস্থ করতে আলুবোখারার তুলনা হয় না।

বয়সের ছাপ দূরঃ

প্রকৃত বয়সের চেয়ে বেশি বয়স দেখানো, চামড়া কুচকে যাওয়া এবং চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট হওয়া মোটেও কাম্য নয়। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত আলুবোখারা খেতে পারেন। আপনাকে সুন্দর সতেজ রাখতে আলুবোখারার কোনো তুলনা হয় না। এমনকি ত্বক এবং চুলের যত্নেও আলুবোখারা সেরা।

স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাসঃ

এই ফলটিতে উপস্থিত ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস স্তন ক্যানসারের জন্য দায়ি কোষগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। যেকোনো ক্যানসারের জীবাণুর বৃদ্ধিও ঠেকাতে সক্ষম আলুবোখারায় উপস্থিত এই উপাদান।

হাড়ের গঠনঃ

বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে নিয়মিত ফলটি খেলে হাড়ের গঠন, সুস্থতা এবং বিশেষভাবে মেনোপোজে যাওয়া নারীদের হাড়ের যত্ন নিশ্চিত হয়। হাড়ের ভঙ্গুরতা কাটিয়ে মজবুত কাঠামো গঠনে আলুবোখারা খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।

রোগ প্রতিরোধঃ

আলুবোখারায় পাওয়া পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম। যখন তখন রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকেও বাঁচাতে পারে আলুবোখারা।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিঃ

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে আলুবোখারার রয়েছে দারুণ সক্ষমতা। পড়ুয়া ছাত্রদের জন্য তাই নিয়মিত আলুবোখারা খাওয়া ভালো। এতে পড়া দ্রুত মুখস্থ হওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
source: http://www.online-dhaka.com

Comments

Popular posts from this blog

গাবের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ননী ফলের ১০টি অজানা উপকারিতা

নারিকেল এর উপকারিতা