নিয়মিত আঙ্গুর ফল খান, কোলেস্টরাল কি ভুলে যান
আঙ্গুরের পুষ্টি উপাদান
আঙ্গুরে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। এগুলির মধ্যে রয়েছে বি১, সি, কে ভিটামিন
অন্যতম। এছাড়াও আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম ও খনিজ পদার্থ ম্যাঙ্গানিস। আঙ্গুর শুকিয়ে সাধারণত তৈরি হয় কিশমিশ এবং কিশমিশে রয়েছে ৬০ শতাংশ ফ্রুকটোজ।
আঙ্গুরের চমকপ্রদ স্বাস্থ্য উপকারিতা
১) ক্যানসার নিরাময়ে: আঙ্গুর সাধারণত আমরা জুস করে খেয়ে থাকি।
আঙ্গুরের এই জুসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফামিটরির মতো
গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে, যা আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রদাহ দূর করে
থাকে। সাধারণত এই প্রদাহ ক্যান্সার রোগ জন্মের অন্যতম প্রধান কারণ।
২) ত্বককে সুরক্ষিত রাখে: আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ফাইটো কেমিক্যাল ও
ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট আমাদের ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষ কাজ করে। এতে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এটি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে বিশেষ
ভূমিকা রাখে।
৩) বয়সের ছাপে বাধা: আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেলস ত্বকে বলিরেখা
ফেলে দেয়। আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই ফ্রি
রেডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের ত্বক ঠিক রাখে এবং শরীরে বয়সের ছাপ
পড়া প্রতিরোধ করে।
৪) কিডনির ভাল রাখতে: আঙ্গুরের সব ভিটামিন উপাদানগুলো ক্ষতিকারক
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সহনশীল অবস্থায় রাখে। সেই সঙ্গে আমাদের কিডনির
রোগ-ব্যাধির বিরুদ্ধেও কাজ করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। এ ছাড়া আঙ্গুর
আমাদের মাইগ্রেনের সমস্যা রোধ করে।
৫) নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন: সাধারণত যারা রক্ত সঞ্চালনের
ভারসাম্যহীনতায় ভোগেন বিশেষ করে তাদের জন্য আঙ্গুরের জুস খুবই উপকারী।
আঙ্গুরে মধ্যে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যা আমাদের শরীরে নিয়মিত রক্ত
সঞ্চালনে সহায়ক ও ইনসুলিন বৃদ্ধি করে থাকে।
৬) ভুলে যাওয়া রোগ নিরাময়: আমরা অনেকেই ছোট ছোট বিষয়গুলো খুব
দ্রুত ভুলে যায়। আবার দেখা যায় কোনো কথা বেমালুম স্মৃতি থেকে মুছে যায়। এটি
সত্যিকার অর্থে এক ধরনের রোগ। এই ভুলে যাওয়া রোগটি নিরাময়ে আঙ্গুর
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
৭) স্তন ক্যান্সার নির্মূল: স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছেন যেসব
নারীরা তারা নিয়মিত খেতে পারেন আঙ্গুর। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে আঙ্গুরের
উপাদানগুলো স্তন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে কাজ করতে পুরোপুরি
সক্ষম।
৮) চুলের যত্নে: চুলের একটু অযত্নেই আমাদের চুল খুশকিতে ভরে যায়
এমন অনেকেই আছেন। এছাড়াও দেখা যায় চুলের আগা ফেটে গিয়ে রুক্ষ হয়ে পড়ে, ধূসর
রঙের হয়ে যায় এবং শেষমেশ চুল ঝরতে থাকে। এইসব সমস্যার সমাধানে আপনি আঙ্গুর
খেতে পারেন।
৯) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে: আঙ্গুরে সাধারণত টরোস্টেলবেন নামে এক ধরনের যৌগ থাকে, যা আমাদের শরীরে কোলস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
১০) শরীরের হাড় শক্ত করে: আঙ্গুরে
আছে প্রচুর পরিমাণে তামা, লোহা ও ম্যাংগানিজের মতো খনিজ পদার্থ থাকে, যা
আমাদের শরীরের হাড়ের গঠন ও হাড় শক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
১১) মাথাব্যথা দূর করতে: হঠাৎ করে মাথাব্যথা শুরু হয়ে গেলে আপনি ঔষধ না খেয়ে আঙ্গুর খেলে আরাম বোধ হয়।
১২) চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়: আমাদের চোখ ভালো রাখতে আঙ্গুর অনেক
বেশি কার্যকর। বয়সজনিত সমস্যার কারণে যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের
জন্য অনেক বেশি উপকারী এই ফল।
১৩) অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে আঙ্গুর: আঙ্গুরের
ঔষধি গুনাগুন অনেক। আঙ্গুরের এই ঔষধি গুণের কারণে এটি অ্যাজমার ঝুঁকি থেকে
আমাদেরকে রক্ষা করে এবং আমাদের শরীরে ফুসফুসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ায়।
১৪) বদহজম দূর করতে: যদি নিয়মিত আঙ্গুর খাওয়া হয় তাহলে বদহজম অনেকাংশে দূর হয়। অগ্নিমন্দ্যা দূর করতেও আঙ্গুর অনেক বেশি কার্যকর।
ধর্মীয় মতানুসারে কিশমিশের উপকারিতা
আমাদের
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সা. বলেছেন, তোমরা কিশমিশ বা আঙ্গুর খেতে একটুও
অবহেলা করো না কেননা এই আঙ্গুর ও কিশমিশ আমাদের দেহমন ভাল রাখে । আঙ্গুর
আমাদের স্নায়ুতন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং দুর্বল দেহকে চাঙ্গা করে
তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, সকালে ঘুম থেকে উঠে
নাস্তার আগে খালি পেটে বীচি ছাড়া আঙ্গুর হতে তৈরি ২১টি কিশমিশ খেলে শারীরিক
দুর্বলতা এবং আল জাইমার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।
ইরানের
স্বাস্থ্য চিকিৎসা বিষয়ক ওয়েব সাইটে প্রকাশিত একটা নিবন্ধে বলা হয়েছে যে,
বীচিবিহীন আঙ্গুর থেকে যে কিশমিশ তৈরি হয় তা ক্যান্সার প্রতিরোধ করার
ক্ষমতা আছে । এই জাতীয় কিশমিশ আমাদের রক্তনালীগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল থেকে
মুক্ত হতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, আমাদের রক্তনালীগুলোর কোমলতা বজায়
রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আঙ্গুর থেকে যে সব জিনিস বানানো হয় তার মধ্যে
অন্যতম হলো সিরকা।
source: http://blog.ehaspatal.com/?p=2009

Comments
Post a Comment